আপনি কি জানেন কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয়? কোমরের ডান দিকে ব্যথার কারণ হতে পারে মেরুদণ্ডের সমস্যা, কোমরের নরম টিস্যুর আঘাত বা কিছু অভ্যন্তরীণ অঙ্গের অসুখ। মাঝে মাঝে এই ব্যথা কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে, যা দৈনন্দিন চলাফেরা এবং শারীরিক কার্যক্রমে সমস্যা তৈরি করে। বিশেষ করে যদি কারো অ্যাপেন্ডিক্সে সমস্যা থাকে, তাহলে কোমরের ডান পাশে তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে, যা অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজনের সংকেত দিতে পারে। তাই এমন ব্যথা শুরু হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এছাড়াও, কিডনির সমস্যাও কোমরের ডান পাশে ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে। কিডনির কোনো সংক্রমণ বা পাথরের মতো সমস্যাগুলো প্রায়ই কোমরের ডান দিক এবং নিম্ন পিঠে ব্যথার সৃষ্টি করে। যদিও বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ অঙ্গ শরীরের সামনের দিকে থাকে, মাঝে মাঝে সেগুলোর সমস্যার প্রভাবও কোমরের ডান পাশে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এই ব্যথার প্রকৃতি এবং কারণ বুঝতে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যায়, যা ভবিষ্যতে বড় সমস্যাগুলি এড়াতে সাহায্য করে।
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয় ?
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয়, এটির পেছনে সাধারণত হাড় ও পেশীর সমস্যা বড় ভূমিকা পালন করে, যা মেরুদণ্ডের অস্থিসংযোগে প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, বেশ কিছু অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যা রয়েছে যা কোমরের ডান পাশে ব্যথার কারণ হতে পারে। যদিও ব্যথা কোমরের নিচের ডান পাশে অনুভূত হয়, মূল সমস্যা শরীরের অন্য কোনো অংশেও থাকতে পারে, যা সেই জায়গায় ব্যথা ছড়িয়ে দেয়।
নিচে কিছু সাধারণ কারণের তালিকা দেওয়া হলো, যা কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয় তার সম্ভাব্য কারণগুলো তুলে ধরে। এই কারণগুলো সম্পর্কে জানা থাকলে, দ্রুত সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয় এবং সুস্থতার দিকে আরও দ্রুত অগ্রসর হওয়া যায়।
১. কিডনিতে পাথর
কিডনিতে পাথর হলে মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে পাথরটি যাওয়ার সময় তীব্র ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি ছোট পাথরও কোমর ও পিঠে প্রচণ্ড ব্যথার কারণ হতে পারে। এটি সাধারণত হঠাৎ শুরু হয় এবং সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে।
লক্ষণ
- কোমরের ডান বা বাম দিকে তীব্র ব্যথা, যা পিঠের দিকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- পেশিতে টান পড়া এবং প্রচণ্ড অস্বস্তি হওয়া।
- প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া, যা ক্ষুদ্র পাথর দ্বারা মূত্রনালীতে ক্ষতি হওয়ার কারণে ঘটে।
- বমি বা বমি বমি ভাব হওয়া, পাথরের কারণে মূত্রনালীতে চাপ পড়লে তা অনুভূত হতে পারে।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
প্রাথমিকভাবে প্রচুর পানি পান করলে ছোট পাথর প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে আসতে পারে। তবে বড় পাথর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে, যেমন ESWL (Extracorporeal Shock Wave Lithotripsy) বা লেজার চিকিৎসা।
২. পিত্তথলিতে পাথর
ডান দিকে যকৃতের নিচে অবস্থিত পিত্তথলিতে পাথর জমা হলে কোমরের ডান দিকে এবং পিঠে ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। এটি সাধারণত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরে তীব্র আকারে দেখা দেয়, কারণ পিত্তথলি বেশি পরিমাণে পিত্ত নিঃসরণ করতে বাধ্য হয়।
লক্ষণ
- তীব্র ব্যথা, যা পিঠে এবং ডান কাঁধে ছড়িয়ে যেতে পারে।
- খাবার খাওয়ার পর ব্যথা বাড়তে পারে।
- বমি ভাব, বমি ও গ্যাসের সমস্যা।
- কখনও কখনও জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
প্রাথমিক পর্যায়ে খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন ও ওষুধে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু বড় পাথর হলে শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে, যা সাধারণত পিত্তথলি অপসারণের মাধ্যমে করা হয়।
৩. ফ্যাসেট জয়েন্ট ও আর্থ্রাইটিস
মেরুদণ্ডের পিছনের ফ্যাসেট জয়েন্টে হাড়ের স্পার্স বা আর্থ্রাইটিস হওয়া ব্যথার একটি সাধারণ কারণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অথবা পুরনো কোনো আঘাতের ফলে হাড়ের মধ্যে অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে কোমরের ডান দিকে ব্যথা হতে পারে।
লক্ষণ
- কোমরের ডান বা বাম দিকে ব্যথা, যা মেরুদণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত।
- মেরুদণ্ডের এক পাশে ব্যথা অনুভূত হয়।
- হাঁটাহাঁটি বা নড়াচড়া করলে ব্যথা বাড়ে।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
আবেদনময় তেল মালিশ, গরম পানির সেঁক, ফিজিওথেরাপি এবং ব্যথা নাশক ওষুধ প্রয়োগে সাময়িক আরাম পাওয়া যেতে পারে। তবে গুরুতর আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে বিশেষ চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে।
৪. অ্যাপেন্ডিসাইটিস
অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ হলে সাধারণত পেটের মাঝখানে ব্যথা অনুভূত হয়, যা পরে নিচের ডান দিকে চলে যায়। এটি একটি জরুরি সমস্যা কারণ অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
লক্ষণ
- পেটের মাঝখানে মৃদু ব্যথা দিয়ে শুরু হয়।
- ব্যথা ধীরে ধীরে ডান দিকে চলে যায় এবং আরও তীব্র হয়।
- চাপ দিলে বা হাঁটলে ব্যথা আরও বাড়ে।
- বমি বমি ভাব, জ্বর, ও ক্ষুধা হ্রাস।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ দেখা দিলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণত, অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা হয় (অ্যাপেন্ডেকটমি)।
৫. স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্ট ডিসঅর্ডার
পেলভিসের সাথে সংযুক্ত স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্ট যদি লক হয়ে যায় বা অস্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করে, তাহলে কোমরের ডান দিকে ব্যথা সৃষ্টি হয়। এই জয়েন্টের সমস্যা সাধারণত আঘাত, অতিরিক্ত ব্যায়াম, অথবা দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় বসে থাকার কারণে হতে পারে।
লক্ষণ
- কোমরের ডান দিকে ব্যথা।
- পেলভিসের কাছে এবং উরুর দিকে ব্যথা ছড়াতে পারে।
- হাঁটতে বা ওঠা-বসা করলে ব্যথা বাড়ে।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
বিশ্রাম, ফিজিওথেরাপি, স্যাক্রোইলিয়াক বেল্ট ব্যবহার, এবং ব্যথা নাশক ওষুধ কিছুটা আরাম দিতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শে বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
৬. স্কোলিওসিস (মেরুদণ্ডের বক্রতা)
মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বক্রতার কারণে মেরুদণ্ডের একটি দিকে বেশি চাপ পড়ে এবং পেশিগুলোর টানটান অবস্থা তৈরি হয়। ফলে কোমরের ডান দিকে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত বংশগত হতে পারে বা ছোট বেলা থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
লক্ষণ
- মেরুদণ্ডের বক্রতার ফলে কোমরের এক দিকে ব্যথা অনুভূত হয়।
- শরীরের ভারসাম্যহীনতার কারণে নড়াচড়ার সমস্যাও হতে পারে।
- পিঠ বা কোমরে শক্ত ভাব ও পেশিতে চাপ অনুভূত হয়।
প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা
ফিজিওথেরাপি, পিঠে ব্যথা নাশক ব্যায়াম ও কিছু বিশেষ চিকিৎসার মাধ্যমে স্কোলিওসিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে গুরুতর অবস্থায় অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।
কোমরে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকিতে কারা রয়েছেন?
কোমর ব্যথা, যা প্রায় সব মানুষের জীবনের কোনো না কোনো সময় এসে হাজির হয়, একটি খুব সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেকেই জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হন, এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে কোমর ব্যথার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, এবং এই ব্যথা আপনার কোমরের ডান বা বাম যেকোনো অংশে, কখনো কখনো মেরুদণ্ডের আশেপাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আপনি কোমর ব্যথার ঝুঁকিতে থাকতে পারেন যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাসগুলো পর্যালোচনা না করেন এবং শারীরিক সুস্থতার প্রতি সচেতন না হন। কোমর ব্যথার কিছু সাধারণ কারণ এবং ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে:
- ভুল ভঙ্গিমায় দাঁড়ানো বা বসা: দীর্ঘ সময় খারাপ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা বা সোজা হয়ে না বসা শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা শেষ পর্যন্ত কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। নিয়মিত ভুল ভঙ্গিমা শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং পেশী ও স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করে।
- শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: আধুনিক জীবনে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে বসে কাজ করেন, এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার সময় কম পান। শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কোমরে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেশী মজবুত থাকে এবং এই ব্যথার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।
- ওজনের ভার: অতিরিক্ত ওজন পেশী ও হাড়ের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে কোমরের নিচের অংশে। অতিরিক্ত ওজন শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখায় বাধা দেয়, যা কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ।
- গর্ভাবস্থা: গর্ভবতী নারীদের জন্য কোমর ব্যথা খুব সাধারণ সমস্যা। শরীরের মধ্যস্থলে ওজনের ভার বেশি হওয়ার কারণে পিঠ এবং কোমরের ওপর চাপ পড়ে, যা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- আঘাত বা দুর্ঘটনা: পড়ে যাওয়া বা দুর্ঘটনার কারণে কোমরের পেশী ও স্নায়ুতে আঘাত লাগতে পারে, যা স্থায়ী ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি ছোটখাটো আঘাতও সময়ের সাথে কোমরের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- স্বাস্থ্য সমস্যা: বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন আর্থ্রাইটিস বা বাতের রোগ, এবং কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের কারণে কোমর ব্যথা হতে পারে। এসব রোগ মেরুদণ্ডের হাড় বা গাঁটে পরিবর্তন ঘটায়, যা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কোমর ব্যথার জন্য সময়মতো সচেতন হওয়া এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত সঠিক ভঙ্গিমায় বসা ও দাঁড়ানো, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ কোমর ব্যথা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। শরীরের প্রতি যত্নবান থাকলে এই সমস্যাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কমানোর উপায়
কোমরে ব্যথা অনেক কারণেই হতে পারে এবং এটি একটি খুবেই সাধারণ সমস্যা। এটা যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হতে পারে, তেমনি কোনো দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া, অথবা শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপের কারণেও হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ব্যথা আসে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু ভুলভ্রান্তির কারণে। যেমন, ভারী কিছু তুলতে গিয়ে ভুলভাবে ঝুঁকে যাওয়া, কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থায় বসে থাকা, ভ্যাকুয়াম ক্লিনিংয়ের সময় সঠিক ভঙ্গি অনুসরণ না করা এবং অতিরিক্ত ভারী ব্যাগ বহন করা। সুখবর হলো, বেশিরভাগ কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং সহজ কিছু অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা কোমর ব্যথার ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারি।
-
iStim EM-5200 Pelvic Floor Incontinence Stimulator- EMS Muscle Massager for Pelvic Therapy (Female)
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 28,000.00.৳ 25,000.00Current price is: ৳ 25,000.00. -
Rechargeable 2 Channel TENS/EMS Electric Therapy Machine- EM-6300A
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 20,000.00.৳ 18,000.00Current price is: ৳ 18,000.00. -
Tista TENS Muscle Stimulator and Multifunctional Massager Series
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 8,000.00.৳ 6,000.00Current price is: ৳ 6,000.00.
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোমর ব্যথা প্রতিরোধে কার্যকর কিছু উপায় এবং এগুলোর পেছনের কারণ:
১. নিয়মিত ব্যায়াম
কোমর ব্যথা প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম খুবই কার্যকর। পিঠের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করতে ব্যায়াম বিশেষভাবে উপকারী। এতে করে দৈনন্দিন কার্যকলাপে পিঠের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না এবং কোমরের মাংসপেশি আরও স্থিতিশীল থাকে। বিশেষ করে, যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তাদের জন্য হালকা ব্যায়াম খুবই প্রয়োজনীয়। দৈনিক কিছুটা সময় হাঁটাচলা, স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম করলে পিঠ এবং কোমরের পেশিগুলো শক্তিশালী থাকবে। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেটের চারপাশে অতিরিক্ত ওজন হলে তা পিঠের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে যা কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। তাই প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট ব্যায়াম আপনার কোমরের স্বাস্থ্যকে বজায় রাখতে সাহায্য করে।
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
সুস্থ মেরুদণ্ডের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত মশলাদার, প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে চাপ দিতে পারে এবং হজম প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে শরীরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কোমর ব্যথার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ মেরুদণ্ড ও হজম প্রক্রিয়ার জন্য আমাদের খাদ্যতালিকায় তাজা ফলমূল, শাকসবজি, চর্বিহীন মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য এবং পুরো শস্য রাখার চেষ্টা করা উচিত। এই খাবারগুলো হজম প্রক্রিয়াকে সঠিক রাখে এবং মেরুদণ্ডের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করে।
৩. সঠিক ভাবে ঘুমানো
কোমরের স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ঘুমের অবস্থান বজায় রাখা প্রয়োজন। পিঠের মাংসপেশিকে আরামদায়ক রাখার জন্য সঠিকভাবে ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। যারা পেটের ওপর শুয়ে ঘুমান, তারা কোমরের চাপ কমাতে তলপেটের নিচে একটি বালিশ রাখতে পারেন। পিঠ বা পাশ ফিরে শোয়াও কোমরের জন্য আরামদায়ক। পাশাপাশি, ভাল মানের গদি এবং সাপোর্টিভ বালিশ ব্যবহার করলে পিঠের ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং কোমরের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৪. সঠিক ভঙ্গিতে বসা এবং কাজ করা
অফিস বা বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে সঠিক ভঙ্গিতে বসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই কাজের সময় কম্পিউটারের সামনে অতিরিক্ত ঝুঁকে থাকেন অথবা মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ নিচু হয়ে থাকেন, যা পিঠের পেশিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। বাড়িতে এবং অফিসে সঠিক ওয়ার্কস্টেশনে বসার চেষ্টা করুন। কম্পিউটার স্ক্রিনের উচ্চতা যেন চোখের লেভেলে থাকে এবং চেয়ারের পিছনে যথাযথ সাপোর্ট থাকে, সে বিষয়েও খেয়াল রাখুন। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একবার উঠে দাঁড়িয়ে স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে পিঠের পেশি শিথিল থাকে এবং ব্যথার ঝুঁকি কমে।
৫. মানসিক চাপ কমান
মানসিক চাপ কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে, যা অনেকেই খেয়াল করেন না। স্ট্রেস বা মানসিক চাপ শরীরের বিভিন্ন অংশে টান সৃষ্টি করে এবং পিঠের মাংসপেশি তার মধ্যে অন্যতম। যখন আমরা চাপের মধ্যে থাকি, তখন শরীর প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে মাংসপেশি টানটান করে রাখে। এই দীর্ঘস্থায়ী টান বা স্ট্রেস কোমরের ব্যথার কারণ হতে পারে। স্ট্রেস কমানোর জন্য যোগব্যায়াম, ধ্যান, গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন এবং মাইন্ডফুলনেস খুবই কার্যকর।
৬. প্রয়োজনীয় সময়ে আরাম ও বিশ্রাম নিন
দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে একটু বিশ্রাম বা আরাম নিতে ভুলবেন না। বিশেষ করে যারা ভারী কাজ করেন বা বেশি সময় ধরে এক স্থানে বসে থাকেন, তাদের জন্য নিয়মিত বিরতি নেওয়া জরুরি। ভারী কাজের পর পিঠ ও কোমরের পেশিগুলোকে বিশ্রাম দিলে সেগুলো পুনরুজ্জীবিত হয় এবং ব্যথার ঝুঁকি কমে যায়।
সুতরাং, এই সাধারণ অভ্যাসগুলো দৈনন্দিন জীবনে অনুসরণ করলে কোমর ব্যথার ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। আমাদের শরীরের কোমর অংশটি বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই এর প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, সঠিক ভঙ্গিতে বসা এবং কাজ করা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত বিশ্রাম। সব মিলিয়ে এই অভ্যাসগুলো গড়ে তুললে আপনার কোমর সুস্থ থাকবে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রাও সহজ হবে।
কখন ডাক্তার এর কাছে যেতে হবে?
যে কোনো ব্যথা হঠাৎ শুরু হয়, খুব তীব্র হয়, নির্দিষ্ট স্থানে থাকে বা সময়ের সাথে বেড়ে যায়, এমন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কোমরের ডান পাশে ব্যথার সাথে জ্বর বা শ্বাস নিতে সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, টাকাইকার্ডিয়া, ঠান্ডা ঘাম, সাধারণ অসুস্থতা, বমি বা ডায়রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
টেন্স থেরাপি এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন কেন দরকার?
টেন্স থেরাপি (TENS Therapy) এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যথা এবং অস্বস্তি দূর করতে একটি নির্ভরযোগ্য সমাধান। যখন পিঠের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা দীর্ঘদিনের ক্রনিক ব্যথা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে, তখন এই থেরাপিগুলো প্রাকৃতিকভাবে আরাম এনে দেয়। টেন্স থেরাপি মেশিন স্নায়ুতে হালকা বৈদ্যুতিক প্রবাহ প্রেরণ করে ব্যথার সংবেদন কমায়, আর ইলেকট্রিক থেরাপি পেশীগুলোকে শিথিল করে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এগুলো শুধু শারীরিক আরামের জন্য নয়, মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। সার্জারির পর, আঘাত বা অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে শরীর ক্লান্ত হলে এগুলো একধরনের শান্তি বয়ে আনে। সহজে ব্যবহারযোগ্য এই যন্ত্রগুলো অনেক সময় প্রিয়জনের মতোই যত্ন নিয়ে আমাদের ব্যথা কমিয়ে জীবন সহজ করে তোলে।
-
4 Channel Taiwan Made TENS EMS Therapy Machine EV-906 for Pain Relief
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 27,000.00.৳ 25,000.00Current price is: ৳ 25,000.00. -
Dual Channel/2 Channel Taiwan Made TENS EMS Therapy Machine
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 15,000.00.৳ 12,000.00Current price is: ৳ 12,000.00. -
Jumper TENS Therapy Device JPD-ES210
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 7,000.00.৳ 5,000.00Current price is: ৳ 5,000.00.
সচরাচর সকলে যে প্রশ্ন গুলো করে থাকেন
কোমরের ডান পাশের ব্যথা নিয়ে আমি কি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারি?
হ্যাঁ, পারবেন, তবে চিকিৎসা না করলে ব্যথা আরও বাড়তে পারে।
কোমরের ডান পাশের ব্যথা কি চিকিৎসা করার পরে ফিরে আসতে পারে?
হ্যাঁ, কিছু কিছু ব্যথা আবার ফিরে আসতে পারে।