আজকের ব্যস্ত জীবনে কোমর ব্যথা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহিলারা বিভিন্ন কারণে এই সমস্যায় ভোগেন। গর্ভাবস্থা, হরমোনের পরিবর্তন, দৈনন্দিন কাজের চাপ, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি কারণে কোমর ব্যথা তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা চেষ্টা করব আপনাদেরকে কোমর ব্যথার কারণগুলি বুঝতে সাহায্য করার পাশাপাশি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকর উপায়ও জানাব।
মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
মহিলাদের কোমর ব্যথা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা, যা নানা কারণে হতে পারে। কখনো কখনো এই ব্যথা হালকা হয় এবং সহজেই সেরে যায়। তবে, কখনো এটি তীব্র হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে।
মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ গুলো হলো –
১. মাসিকের প্রভাব
মাসিক চলাকালীন জরায়ু সংকুচিত হয়, যা কোমরের পেশিতে চাপ ফেলে এবং ব্যথা তৈরি করে। অনেক মহিলার ক্ষেত্রে এটি খুবই সাধারণ এবং মাসিক শেষ হলে স্বাভাবিকভাবেই সেরে যায়।
২. গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় শরীরের ওজন বাড়ে, পিঠের মাংসপেশিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এছাড়া, হরমোনজনিত পরিবর্তন এবং মেরুদণ্ডের ভারসাম্য হারানোর কারণেও কোমর ব্যথা হয়। সন্তান জন্মের পরও অনেক সময় এই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
৩. পেশীর টান ও চাপ
যখন ভুল ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো হয়, অথবা ভারী জিনিস তোলা হয়, তখন কোমরের পেশীতে টান পড়ে। অতিরিক্ত ব্যায়াম বা পেশীর অতিরিক্ত ব্যবহারও কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
৪. মেরুদণ্ডের সমস্যা
মেরুদণ্ডের অসুখ যেমন স্পন্ডিলাইটিস, অস্টিওআর্থারাইটিস বা ডিস্ক হার্নিয়েশন কোমরে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
৫. মানসিক চাপ
দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ পেশীকে শক্ত করে তোলে, যা কোমরের ব্যথার একটি বড় কারণ। মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে ব্যথা কমানো সম্ভব।
৬. অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা
যথেষ্ট ব্যায়ামের অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান কোমর ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়। যারা দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাটান, তাদের মধ্যেও এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
৭. অন্যান্য শারীরিক সমস্যা
- কিডনি পাথর: এটি কোমরের একপাশে তীব্র ব্যথা তৈরি করতে পারে।
- ইউটিআই (মূত্রনালী সংক্রমণ): সংক্রমণ কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
- এন্ডোমেট্রিওসিস: জরায়ুর টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পেলে এটি কোমর ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
- ফাইব্রোমিয়ালজিয়া: এই অসুখে পুরো শরীরে ব্যথা হয়, যা কোমরে তীব্র হতে পারে।
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিরোধ
মহিলাদের সঠিক প্রতিরোধের মাধ্যমে এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখা যায়। নিচে এর প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –
- নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম যেমন ইয়োগা বা স্ট্রেচিং কোমরের পেশিকে মজবুত রাখে।
- সঠিক ভঙ্গি অনুশীলন: অফিসে বা বাড়িতে কাজ করার সময় সঠিক ভঙ্গিতে বসা ও দাঁড়ানো উচিত।
- ভারী জিনিস তোলার সময় সতর্কতা: ভারী জিনিস তোলার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটু ভেঙে তুলুন।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর খাবার খেলে হাড় ও পেশি শক্তিশালী থাকে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান।
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ পেশির টান সৃষ্টি করে। তাই রিলাক্সেশন বা মেডিটেশন অভ্যাস করা উচিত।
- উপযুক্ত গদি ব্যবহার: ঘুমানোর জন্য কোমর-বান্ধব, মাঝারি নরম বা শক্ত গদি বেছে নিন।
- উচ্চ হিল পরিহার করুন: নিয়মিত উচ্চ হিল পরলে কোমরে চাপ পড়ে, তাই আরামদায়ক জুতা পরুন।
কোমর ব্যথার জন্য কখন ডাক্তার দেখাবেন?
- যদি ব্যথা খুব তীব্র হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে থাকে।
- যদি ব্যথার সঙ্গে জ্বর, কাঁপুনি বা ওজন কমে যায়।
- যদি পায়ে দুর্বলতা আসে বা পা ঠিকমতো কাজ না করে।
- যদি মূত্রত্যাগ বা মলত্যাগে সমস্যা হয়।
মহিলাদের কোমর ব্যথার ব্যায়াম
কোমর ব্যথা অনেকের জন্যই বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর। তবে, কিছু ব্যায়াম নিয়মিত করলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই কীভাবে করবেন –
এক পা তোলার ব্যায়াম
- বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই হাত শরীরের পাশে রাখুন এবং দুই পা সোজা করে শুয়ে থাকুন।
- হাঁটু ভাঁজ না করে একটি পা আস্তে আস্তে ওপরে তুলুন যতটা সম্ভব।
- ১০ সেকেন্ড এভাবে রাখুন।
- এবার একইভাবে অন্য পাটি তুলুন।
দুই পা তোলার ব্যায়াম
- একই ভঙ্গিতে শুয়ে এবার একসঙ্গে দুই পা তুলুন।
- পায়ের ভঙ্গি ঠিক রেখে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
হাঁটু বুকের কাছে আনার ব্যায়াম
- একটি হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরুন।
- হাঁটু বুকে লাগানোর চেষ্টা করুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- এরপর অপর হাঁটু একইভাবে করুন।
টেন্স থেরাপি এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন কেন দরকার?
টেন্স থেরাপি (TENS Therapy) এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন ব্যথা কমানোর সহজ ও কার্যকর উপায়। পিঠে ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, ক্রনিক ব্যথা বা আঘাতজনিত অস্বস্তি হলে, এই মেশিনগুলো হালকা বৈদ্যুতিক প্রবাহের মাধ্যমে স্নায়ুর ব্যথার সংকেত কমায় এবং পেশি শিথিল করে, যা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে শরীর ও মনে আরাম আনে। বিশেষ করে মহিলাদের কোমর ব্যথার মতো সমস্যা সময়মতো চিকিৎসা এবং জীবনধারায় পরিবর্তনের মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব। সহজে ব্যবহারযোগ্য এই থেরাপি মেশিনগুলো আমাদের ব্যথা কমিয়ে স্বাভাবিক ও আরামদায়ক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
-
Dual Channel/2 Channel Taiwan Made TENS EMS Therapy Machine
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 15,000.00.৳ 12,000.00Current price is: ৳ 12,000.00. -
Rechargeable 2 Channel TENS/EMS Electric Therapy Machine- EM-6300A
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 20,000.00.৳ 18,000.00Current price is: ৳ 18,000.00. -
Tista TENS Muscle Stimulator and Multifunctional Massager Series
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 8,000.00.৳ 6,000.00Current price is: ৳ 6,000.00.
বিস্তারিত জানুন: ভেরিকোসিল থেকে মুক্তির উপায়, ব্যায়াম এবং এর ঘরোয়া চিকিৎসা