আমাদের প্রতিদিনের জীবনে হাঁটা, দৌড়ানো বা বসা থেকে ওঠার সময় হাঁটু ও তার আশপাশের মাংসপেশির উপর প্রচুর চাপ পড়ে। ফলে মাঝে মাঝে আমরা অনুভব করি হাঁটুর নিচে কিংবা হাঁটুর উপরের মাংসপেশিতে ব্যথা। এ ধরনের ব্যথা অনেকের কাছেই সাধারণ মনে হলেও এর পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে কিছু জটিল কারণ, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অনেকেই অভিযোগ করেন যে দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর হঠাৎ হাঁটা শুরু করলে বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের পর হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে ব্যথা অনুভূত হয়, আবার শারীরিক কার্যকলাপের পর বা হাঁটু বাঁকালে হাঁটুর উপরের মাংসপেশিতেও ব্যথার সম্মুখীন হন। এ ধরনের ব্যথার কারণগুলো সঠিকভাবে বুঝে প্রতিকার নিলে শুধু আরাম পাওয়া যায় না বরং দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যার ঝুঁকিও কমিয়ে আনা সম্ভব।
আজকের ব্লগে আমরা আলোচনা করবো হাটুর নিচে মাংসপেশিতে ব্যথা এবং হাটুর উপরে মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ, এবং কিভাবে এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধ বা মোকাবিলা করা যায়।
হাটুর নিচে মাংসপেশিতে ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
হাটুর নিচে মাংসপেশিতে ব্যথা সাধারণ একটি সমস্যা হলেও এটি দেহের স্বাভাবিক কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এর মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেশীর ক্র্যাম্প, টেন্ডোনাইটিস, শিন স্প্লিন্ট, ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি, এবং অনুপযুক্ত জুতা পরা। এসব সমস্যা সাধারণত অতিরিক্ত মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, বা পেশীর অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে উদ্ভূত হয়। হাঁটুর নিচে মাংসপেশির ব্যথার প্রকৃত কারণ বুঝতে হলে জীবনযাত্রার প্যাটার্ন এবং শারীরিক অবস্থার দিকে নজর দিতে হবে।
পেশীর ক্র্যাম্প একটি সাধারণ কারণ, যা পেশীতে আকস্মিক এবং তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। এটি বিশেষত ঘুমানোর সময় বা দীর্ঘ সময় একই অবস্থানে থাকার কারণে হতে পারে। আবার টেন্ডোনাইটিস হলো টেন্ডনের প্রদাহ, যা দীর্ঘমেয়াদে চাপ বা অতিরিক্ত কাজের ফলে ঘটে। শিন স্প্লিন্টের ক্ষেত্রে হাঁটুর নিচে সামনের দিকে ব্যথা হয়, যা সাধারণত দৌড়বিদ বা অতিরিক্ত ব্যায়ামকারীদের মধ্যে দেখা যায়।
ব্যথার আরেকটি বড় কারণ হলো হাঁটুর আঘাত। ACL ইনজুরি, ফ্র্যাকচার বা ছেঁড়া মেনিস্কাসের মতো সমস্যাগুলোতে হাঁটুর নিচের মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাংসপেশির থেঁতলে যাওয়া বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া থেকেও এমন সমস্যা দেখা দেয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা লুপাসের মতো অটোইমিউন রোগ এবং ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ডেঙ্গু, মাংসপেশিতে দুর্বলতা সৃষ্টি করে এবং ব্যথার কারণ হতে পারে।
ব্যথা কমানোর জন্য বরফ সেঁক অত্যন্ত কার্যকর। এটি প্রদাহ কমায় এবং পেশী শীতল করে। পাশাপাশি, গরম সেঁক দিলে পেশীর স্টিফনেস দূর হয় এবং রক্ত চলাচল বাড়ে। মৃদু স্ট্রেচিং ও ম্যাসাজ পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যেসব পেশী খুব চাপের মধ্যে থাকে, সেগুলো ম্যাসাজের মাধ্যমে আরাম অনুভব করে।
সঠিক জুতা পরিধানও মাংসপেশির ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এমন জুতা ব্যবহার করা উচিত যা পায়ে সঠিক সাপোর্ট দেয়। চ্যাফিং এবং জ্বালাপোড়া প্রতিরোধে প্যাড ব্যবহার করা যেতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমাতে এবং শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে পর্যাপ্ত জল পান অত্যন্ত জরুরি।
এছাড়াও, অতিরিক্ত কাজ বা ব্যায়ামের কারণে মাংসপেশির এনডুরেন্স পাওয়ার কমে গেলে ব্যথা দেখা দিতে পারে। সময়মতো ব্যায়ামের ধরণ পরিবর্তন এবং বিশ্রাম নেওয়া এ ক্ষেত্রে কার্যকর। কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও ব্যথার কারণ হতে পারে। এটি চিকিৎসকের পরামর্শে সমাধান করা উচিত।
হাটুর নিচে রগে ব্যাথা
হাঁটুর নিচে রগে ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত আঘাতের ফলে হাঁটুর জয়েন্টের চারপাশের লিগামেন্ট ও টেন্ডনের সমস্যার কারণে ঘটে। হাঁটুর অস্থিরতা, অর্থাৎ যখন হাঁটুর টিস্যু জয়েন্ট থেকে সরে যায়, তখনও এই ব্যথা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, দীর্ঘ দূরত্বে দৌড়ানোর মতো উচ্চ-প্রভাবিত ব্যায়াম হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে।
অন্যদিকে, পায়ের রগে টান লাগার কিছু সাধারণ কারণের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ব্যায়াম বা পরিশ্রম, পায়ের পেশির অতিরিক্ত ব্যবহার, পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন, এবং খুব ঠান্ডা আবহাওয়া। গর্ভকালীন সময়ে, বিশেষ করে শেষের দিকে, প্রয়োজনীয় খনিজের অভাবে পায়ের রগে টান লাগতে পারে। যদি হাঁটুর ব্যথা বা ফোলা তিন মাসের বেশি স্থায়ী হয়, তবে একজন অর্থোপেডিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
হাটুর উপরে মাংসপেশিতে ব্যথা ও প্রতিকার
হাঁটুর উপরের মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়ার কারণ হতে পারে আঘাত, মচকে যাওয়া বা স্ট্রেন, স্নায়ুর ক্ষতি, রক্ত জমাট বাঁধা, আর্থ্রাইটিস, হাঁটুর বরসাইটিস, কিংবা হাড়ের জোড় ছুটে যাওয়া বা আংশিক ছুটে যাওয়া। এমনকি ভুল জুতা পরার মতো সাধারণ বিষয়ও এ ব্যথার কারণ হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে একই ভঙ্গিতে বসে থাকা বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমও এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এগুলোর ফলে মাংসপেশিতে প্রদাহ, ফোলা বা শক্ত হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, যা হাঁটাচলার স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
মাংসপেশির ব্যথা কমানোর জন্য বেশ কিছু সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমত, আক্রান্ত জায়গায় বিশ্রাম দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। হাঁটুর ব্যথার ক্ষেত্রে গরম সেঁক দেওয়া স্বস্তিদায়ক হতে পারে। তবে আঘাতের কারণে ব্যথা হলে প্রাথমিকভাবে বরফ সেঁক দেওয়া উচিত, যা ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। মৃদু স্ট্রেচিং এবং ম্যাসাজ করার মাধ্যমে মাংসপেশির রক্ত সঞ্চালন উন্নত করা সম্ভব। প্যারাসিটামল বা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়া এড়ানো উচিত। মেনথল বা ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম মিশ্রিত মলম আক্রান্ত জায়গায় ব্যবহার করলে তা সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে।
কাজ করার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা এবং পা খানিকটা উঁচুতে রাখা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক জুতা পরার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা হাঁটুর সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত করে, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পরিচর্যা ও সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
টেন্স থেরাপি এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন কেন দরকার?
টেন্স থেরাপি (TENS Therapy) এবং ইলেকট্রিক থেরাপি মেশিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যথা এবং অস্বস্তি দূর করতে একটি নির্ভরযোগ্য সমাধান। পিঠের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা দীর্ঘস্থায়ী ক্রনিক ব্যথা যখন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করে, তখন এই থেরাপি প্রাকৃতিকভাবে আরাম এনে দেয়। টেন্স থেরাপি মেশিন স্নায়ুতে হালকা বৈদ্যুতিক সিগনাল প্রেরণ করে ব্যথার অনুভূতি কমায়, আর ইলেকট্রিক থেরাপি পেশি শিথিল করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। শুধু শারীরিক আরামের জন্য নয়, এগুলো মানসিক স্বস্তি দিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সার্জারির পর, আঘাতের কারণে, অথবা অতিরিক্ত চাপের ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লে এই থেরাপি শান্তি ও আরাম দিয়ে থাকে। সহজে ব্যবহারযোগ্য এই যন্ত্রগুলো আমাদের জীবনে এমনভাবে সাহায্য করে, যেন একজন প্রিয়জন যত্ন নিয়ে আমাদের ব্যথা দূর করছে। জীবনকে সহজ এবং আরামদায়ক করতে, টেন্স থেরাপি ও ইলেকট্রিক থেরাপি হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।
-
4 Channel Taiwan Made TENS EMS Therapy Machine EV-906 for Pain Relief
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 27,000.00.৳ 25,000.00Current price is: ৳ 25,000.00. -
Dual Channel/2 Channel Taiwan Made TENS EMS Therapy Machine
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 15,000.00.৳ 12,000.00Current price is: ৳ 12,000.00. -
Rechargeable 2 Channel TENS/EMS Electric Therapy Machine- EM-6300A
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 20,000.00.৳ 18,000.00Current price is: ৳ 18,000.00. -
Tista TENS Muscle Stimulator and Multifunctional Massager Series
TENS/EMS THERAPY MACHINE Original price was: ৳ 8,000.00.৳ 6,000.00Current price is: ৳ 6,000.00.
বিস্তারিত জানুন: ঘাড় ব্যথার কারণ ও প্রতিকার কি জানুন!!